বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও ছাত্রদের মানসিক চাপ: এক করুণ বাস্তবতা

 Post Content:


সম্প্রতি বাংলাদেশের ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের CSE বিভাগের এক মেধাবী শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। তার চিরকুটে লেখা ছিলো—

"পড়াশোনার এত চাপ আমি নিতে পারছি না। এই সিস্টেম আমার জন্য না।"

এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি কেবল একটি জীবনকে থামিয়ে দেয়নি, বরং বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার অসাড়তা এবং ছাত্রদের উপর অমানবিক চাপের একটি করুণ প্রতিচ্ছবি হিসেবে সামনে এসেছে।

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্যা কী?

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনও ‘জিপিএ’, ‘সিজিপিএ’, এবং ‘মেধা তালিকা’ নির্ভর। ছাত্রদের মনে গেঁথে দেওয়া হয় যে নম্বরই সাফল্য নির্ধারণ করে। কিন্তু, কেউ প্রশ্ন তোলে না—এই সাফল্যের মূল্য কতটা?

প্রকৃত শিক্ষা নয়, মুখস্থবিদ্যা ও নম্বরভিত্তিক মূল্যায়ন।

প্রচণ্ড প্রতিযোগিতা ও পারিবারিক/সামাজিক প্রত্যাশা।

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলাও যেন নিষিদ্ধ।

কেন ছাত্ররা ভেঙে পড়ে?

একজন তরুণ যখন প্রতিদিন শুধুই টিকে থাকার জন্য যুদ্ধ করে, ঘুম বাদ দিয়ে পড়াশোনা করে, তখন জীবনের স্বাভাবিক আনন্দ কোথায় হারিয়ে যায়। বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো, খেলাধুলা, শখের চর্চা—সব কিছু চাপা পড়ে যায় "ক্যারিয়ার" নামক এক অদৃশ্য দানবের নিচে।

সমাধানের পথ কী?

১. শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন: নম্বরের চেয়ে শেখাকে গুরুত্ব দিতে হবে।

২. মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা: স্কুল ও কলেজে কাউন্সেলিং সার্ভিস চালু করতে হবে।

৩. অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে: সন্তানকে বুঝতে হবে, শুধু চাপ নয়।

৪. সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন: পরীক্ষায় খারাপ করলে মানুষ খারাপ হয়ে যায় না।

শেষ কথা

এই আত্মহত্যা যেন শুধু একখানা খবর না হয়, বরং হোক একটি চেতনার জাগরণ। আমরা যদি এখনই না বদলাই, তাহলে প্রতিনিয়ত এমন মূল্য চুকাতে হবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবন দিয়ে।


Comments

Popular posts from this blog

Bangladesh: The Land of Rivers, Resilience, and Rich Culture

Top Reasons to Visit Sri Lanka in 2025 – A Paradise Island Full of Wonders

Nepal: A Magical Land of Mountains, Myths & Culture